সমকামিতা বর্জিত কোনো ধর্ম নেই

Asian senior elderly male gay couple lying down on bed with rainbow flag. Attractive mature man LGBTQ people looking at each other while spend morning routine after wake up together in bedroom at home

খ্রিস্টধর্মের ছোট্ট একটি অনুসন্ধান-দৃষ্টান্ত দেখলেই বোঝা যায়, লেভিটিকাসে (ওল্ড টেস্টামেন্ট) সমকামিতার বিরুদ্ধে কট্টর শাস্তির কথা বলা হয়েছে “একজন পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে নারীর মতো বিছানায় গেলে, তাদের রক্তপাত পর্যন্ত দণ্ডিত হবে” (লেভিটিকাস ২০)। নিউ টেস্টামেন্টে কিছু নারীর প্রতি নিস্পৃহতা থাকলেও, মূলত: রোমানস ১:২৬-২৭ অনেকে ‘সমপ্রেম’ ও ‘সমকামী’ সম্পর্কের বিরুদ্ধে তর্জন হিসেবেই দেখেন। আবার কেউ বলেন, শুধু ‘প্রাকৃতিক’ বিষমকামীদের সমকামিতা চর্চাতেই শাস্তি, কিন্তু প্রকৃত সমকামীদের ক্ষেত্রে নয় এই বিতর্ক নতুন নয়।

আধুনিক সময়ের খ্রিস্টধর্ম সংস্কারের মধ্য দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে ওল্ড টেস্টামেন্টের ঈশ্বরের তুলনায় নিউ টেস্টামেন্টে ‘ক্ষমা’, ‘সহনশীলতা’, ‘ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য’ উঠে এসেছে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ খ্রিস্টান সম্প্রদায় রোমান ক্যাথলিক চার্চ এখন মুখে দৃঢ় কিছু বলেনা, বরং চুপ থাকে সমকামী পুরোহিতদের যৌন হয়রানির অপরাধ প্রকাশ্যে এলে বিলিয়ন ডলার খরচ করে পরিস্থিতি আঁটসাঁট রাখে। অথচ যৌন নিপীড়ন কি কেবল সমকাম বা বিষমকাম দিয়ে বিচার যায়? যৌন নিপীড়নের প্রশ্নে ধর্ম-পরিচয়-সমকামিতা কিছুই নয়, আসল বিষয় হলো সম্মতি-অসম্মতির মানবিকতা।

বিশ্বের বহু ধর্মীয় গোষ্ঠীর মতো ওয়েস্টবোরো ব্যাপটিস্ট চার্চের মুখে আজও ঘৃণাবাক্য, প্রত্যাখ্যান, বৈষম্য থাকলেও, এসব গ্রুপের সংখ্যা নগণ্য, ক্ষমতা কমছে। যেটা বাড়ছে সুচিন্তিত, বিবেকবান ধর্মীয় সংস্করণ, যেখানে সমকামী মানুষদের জন্য সামাজিক জায়গা, মর্যাদা, প্রেম-সম্পর্কের স্বীকৃতি ধীরে হলেও নিশ্চিত হচ্ছে।

সমকামিতা, পুরুষতন্ত্র ও ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণের দ্বৈততা একদিনে ভাঙবে না কিন্তু মানবিকতা, যুক্তি, আইনি বৈধতা, সামাজিক স্বীকারোক্তি যত বাড়বে, ধর্মের ভণ্ড দৃষ্টিভঙ্গি তত দুর্বল হবে। মূল কথা, যৌন পরিচয় ধর্মীয় বিশ্বাস বা সামাজিক মানদণ্ড নয় ব্যক্তিমানুষের আস্থা, অনুভূতি ও স্বাধীন বিচারবুদ্ধির বিষয়। সত্যি সমান ও সমস্ত মর্যাদা সকলের পাওনা, সেটা সমাজ-ধর্ম-বন্ধুত্ব-নোটিশ সবই পাল্টে দিতে পারে, যদি চাই।

Share the Post: